লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ভিডিও কলে বিয়ে হওয়া সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী আখি মনি ‘সুইসাইড নোট’ লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার (০৬ জুলাই) সকালে আদিতমারীত উপজেলার আদিতমারী পশ্চিমপাড়া এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আখি মনি লালমনিরহাটের তালুক উপজেলার খুঁটামারা বত্রিশ হাজারী গ্রামের মো: আইনুল হকের মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সৌদি প্রবাসী মো: শাকিল মিয়ার সঙ্গে ১০ মাস আগে ভিডিও কলের মাধ্যমে আখি মনির বিয়ে হয়। এরপর থেকেই আখি বাবার বাড়িতে থেকে ফজলুল করিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
প্রতিদিনের মতো শুক্রবার (০৫ জুলাই) রাতে পরিবারের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া শেষে নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে যান আখি মনি। পর দিন শনিবার সকালে তার শ্বশুর নূর মোহাম্মদ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, আখির শয়ন কক্ষে একটি খণ্ড-খণ্ড চিরকুট পাওয়া যায়। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আব্বু-আম্মু তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। তোমরা আমাকে আগামীকাল (শনিবার) সকাল ১১টায় নিয়ে যাবা। আমার জীবনে কিছু নেই, তোমরা আমাকে ক্ষমা করো।
এ বিষয়ে আখির বাবা আইনুল হক অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে গতকাল রাতে ফোন দিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতনের কথা বলেছে। রাতেই তাকে নিয়ে আসতে বলেছিল। আমি বলছিলাম সকালে নিতে যাব। সকালে নিতে যাওয়া তার আগেই আমার মেয়ে আখিকে তাকে মেরে ফেলেছে।
আমি এই নির্যাতনকারী ও হত্যাকারীর বিচার চাই। তবে এ বিষয়ে আখি মনির শ্বশুর-শাশুড়ির লোকজনদের কাছে বক্তব্য নিতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদ উন নবী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত আখির বাবা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আশা করছি তদন্ত শেষ হলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।