খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। উপদেষ্টা অনশন ভাঙতে অনুরোধ করলেও শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন— “ভিসি স্যার নামবেন, তবেই আমরা অনশন ছাড়ব।”
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসে এসে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে দাবি শোনেন ও অনশন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।
আলোচনার পর গণমাধ্যমে সি আর আবরার বলেন, “পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে। অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমরা ইতোমধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারা নিরপেক্ষভাবে ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছেন এবং শিগগিরই সুপারিশ করবেন। আমরা চেষ্টা করব সেই সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনও কিছুই আইনবহির্ভূত ভাবে করতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার নিজস্ব আইন রয়েছে। এর মধ্য থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।”
আলোচনার সময় শিক্ষার্থীরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অনশন ভাঙার পর নেতিবাচক ফলাফলের কথা তুলে ধরেন। উত্তরে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “সেখানে অধ্যাপক জাফর ইকবাল যা করেছিলেন, কেন করেছিলেন তা আমি বলতে পারি না। তবে আমি নিজে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে এখানে এসেছি এবং তোমাদের দাবি বিবেচনায় নিচ্ছি।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, “আমরা আমাদের এক দফা দাবিতে অনড়। আমাদের একমাত্র দাবি— উপাচার্যের অপসারণ। এর বাইরে কোনও আলোচনার সুযোগ নেই।”

শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা শেষ করেই শিক্ষার্থীরা আবারও বিক্ষোভ মিছিল করেন। পুরো ক্যাম্পাসে তারা ‘ভিসির পদত্যাগ চাই’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠেন। এর আগে, গতকাল সন্ধ্যায় তালা ভেঙে ছাত্রীরা হলে প্রবেশ করেন। এরও আগে ১৫ এপ্রিল ছেলেদের ৬টি হলের তালা ভেঙেছিলেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, টানা আন্দোলনে কুয়েট ক্যাম্পাসে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা সব বন্ধ। অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসন, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে।