দেশে মাত্র ৯ দিনে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৪ জন। নারী ও শিশু নির্যাতন এখন আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এ যেন এক মহামারি এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ২০ থেকে ২৯ জুন এই সময়ের মধ্যে দেশে ২৪টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। “দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিষয়টি অনেকদিন ধরেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। রাজনীতি, মাদক, মোবাইল ফোনের অবাধ ব্যবহার এবং পর্ণগ্রাফি এগুলো একেকটা মূল কারণ।
তিনি আরও বলেন, এমনকি ৬০ বছরের এক বৃদ্ধও একজন শিশুকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার নতুন আইন তৈরির চিন্তা করছে।” “আমি এখন মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে। যদিও আমি একজন মানবাধিকার কর্মী।”
শুধু ঘর বা পথঘাট নয়, দেশের মাদ্রাসাগুলোতেও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশু-কিশোররা, এমন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “মাদ্রাসাগুলো অনেক সময় দৃষ্টির আড়ালে থেকে যায়, তথ্য আসে না। অথচ সেখানেও শিশুদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে, যা তাদের মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে।”
তিনি বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষকরা এসব ঘটনার দায় স্বীকার করছে কি না, তা পরিষ্কার নয়। তবে এসব বন্ধ করতে হলে স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সরাসরি নজরদারি করতে হবে। “তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে, এটাই আমার দাবি বলে জানান তিনি।
নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৪৫টি নির্যাতনের অভিযোগ জমা হয়েছে। তবে সব অভিযোগের সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। “সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা থাকলেও, তাৎক্ষণিক এবং জনগুরুত্বপূর্ণ অভিযোগগুলোর দ্রুত সমাধান দেওয়া হচ্ছে।
এ পর্যন্ত শতাধিক নারীকে কাউন্সেলিং ও আইনি সহায়তার মাধ্যমে পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শারমীন মুরশিদ বলেন, “আমাদের শুধু এডহক ভিত্তিতে কাজ করলে হবে না। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বছরব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি ঘটনায় দ্রুত সাড়া দেওয়ার মতো কুইক রেসপন্স টিম গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।”