বগুড়ার শেরপুর সরকারি ডি.জে মডেল হাই স্কুলের মাঠে কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই মাসব্যাপী তাঁত শিল্পপণ্য মেলার অবকাঠামো নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে মাঠে খেলাধুলা ও জনসাধারণের চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় তরুণ সমাজ।
এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় তরুণদের ব্যানারে ‘খেলা বাঁচাও আন্দোলন নামের একটি সংগঠন মাঠে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “শেরপুরে খেলাধুলার জন্য উপযুক্ত অন্য কোনো মাঠ নেই। এই মাঠেই সকালে-বিকেলে বিভিন্ন বয়সের মানুষ খেলাধুলা, ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি করেন।
কিন্তু প্রায় ১০ দিন ধরে মাঠে অবকাঠামো নির্মাণের কারণে এসব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। মেলা হলে অন্তত এক মাস মাঠ বন্ধ থাকবে, এরপর সংস্কারের কারণে আরও এক মাস খেলাধুলা বন্ধ থাকবে। ফলে প্রায় তিন মাস আমরা মাঠ ব্যবহার করতে পারব না।”

জানা গেছে, শেরপুর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে এক মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যে গত ১০ দিন ধরে মাঠে দোকানঘর ও অন্যান্য কাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। তবে এখনো পর্যন্ত মেলার জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, “মেলার অনুমতির বিষয়টি জেলা প্রশাসক (ডিসি) অবগত আছেন। আর মাঠ ব্যবহারের অনুমতির বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানে।”
শেরপুর সরকারি ডি.জে মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আখতার উদ্দিন জানান, “প্রেসক্লাবের সভাপতি মাঠ ব্যবহারের অনুমতির জন্য আমার কাছে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েছেন। কিন্তু আমি কোনো অনুমোদন দিইনি, কারণ মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার স্কুল ম্যানেজিং কমিটির। এই কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
প্রেসক্লাবের সভাপতি বলেন, “আমরা মাঠ ব্যবহারের অনুমতির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ, ইউএনও ও ডিসির কাছে আবেদন করেছি। তবে এখন পর্যন্ত অনুমোদন পাইনি। যেহেতু অবকাঠামো তৈরিতে সময় লাগবে, তাই প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছি। অনুমতি পেলে আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে মেলা শুরু হবে।”
শেরপুর খেলোয়ার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক বলেন, “এই মাঠ শুধু খেলার জন্য নয়। এটা শেরপুরবাসীর জন্য একমাত্র উন্মুক্ত স্থান। এখানে মেলার আয়োজন করলে এলকার লোকজনও বিরক্ত হন। কিন্তু ভয়ে কিছু বলতে পারেন না। এই মাঠ শিক্ষার্থী ও এলাকার সাধারণ মানুষের যৌথ সম্পদ—এটি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার অনুচিত।”
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো ফল মেলেনি। মোবাইলে একাধিকবার কল করা এবং ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও জেলা প্রশাসক কোনো মন্তব্য দেননি।