বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নতুন কোনো সনদ নয়, বরং একটি কার্যকর সংসদই এখন সবচেয়ে প্রয়োজন।
শনিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমাদের জুলাই সনদের দরকার নেই। প্রয়োজন এমন একটি সংসদ, যারা গণতন্ত্রকে বাস্তবায়ন করবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, তাদের ভুলিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে হ্রাস করার চেষ্টা করছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ ও তিতিক্ষার বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে—যা অন্য কোনো আন্দোলনের সঙ্গে তুলনীয় নয়। এই দেশের জন্মই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে।’
ক্ষমতার লোভে কিছু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নির্বাচনকে ঘিরে নানা ষড়যন্ত্র করছে বলেও মন্তব্য করেন মেজর হাফিজ। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র হলে তা প্রতিহত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বার্থে অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিএনপি অনেক কিছু মেনে নিয়েছে। “সব দল যেসব বিষয়ে একমত হবে, তা নিয়েই সনদ হবে। আমরা বিভক্তি দেখতে চাই না। এখন প্রয়োজন সুষ্ঠু নির্বাচন, আর ক্ষমতায় এলে বিএনপি যৌক্তিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করবে।”
ঐকমত্য কমিশনের বিষয়ে তিনি বলেন, “কমিশন জোর করে সনদে কিছু বিষয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের স্বার্থে বিএনপি অনেক কিছু মেনে নিয়েছে।”
কলকাতায় আওয়ামী লীগের অফিস খোলার প্রসঙ্গে মেজর হাফিজ বলেন, ‘আপনারা প্রতিটি প্রদেশে অফিস নেন, রেজিস্ট্রেশন নেন, ভারতে মিশে যান। বাংলাদেশে আপনাদের প্রয়োজন নেই।’
সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, “একাত্তরকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। অনেকে ক্ষমতায় গিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই ভয়ে বর্তমান সরকারও ভোট দিতে চায় না।”
তিনি বলেন, “জামায়াত বিএনপির কাঁধে ভর করলেও কোনও আন্দোলনে অংশ নেয়নি। বরং তারা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ২৮ অক্টোবর বিএনপির ওপর গুলি চালানো হয়েছে, অথচ তারা নির্বিঘ্নে সমাবেশ করছে। জামায়েত জনগণের ম্যান্ডেট নিতে ভয় পায়।”
আব্দুস সালাম বলেন, ‘বিএনপি দেশের স্বার্থে অনেক ছাড় দিয়েছে। অথচ এখন তাদের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র চলছে। যারা বিবেকবান, তারা খালেদা জিয়ার কাছে যেতে পারেন।’


