শেরপুরে অনুমোদন বিহীন কারখানার দূষণে অতিষ্ট জনজীবন বগুড়ার শেরপুর আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা রাইস ব্রান তৈরির কারখানার পরিবেশ দূষণে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। এলকাবাসীর অভিযোগ, এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া, এলাকাবাসীর স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবনযাপন বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই তারা অতিদ্রুত কারখানাটি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ধরমোকাম উত্তর পাড়া গ্রামে আবাসিক এলকায় স্থাপন করা হয় আল্লাহ্-ওয়ালা সেমি অটো রাইস মিল। নামে রাইস মিল হলেও কার্যত সেখানে ধানের তুষ থেকে ডি-অয়েলড রাইস ব্রান (ডিওআরবি) তৈরি করা হয়। দিনরাত কারখানার শব্দ ও রাইস ব্রানের গুড়ায় দূষিত হচ্ছে আশেপাশের এলকা। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া, এলাকাবাসীর স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবনযাপন বিঘ্নিত হচ্ছে। এবিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়া জেলা কার্যালয়ে ও শেরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তর তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে কারখনার মালিক আমিনুল ইসলাম ও রেজাউল করিম আকন্দকে তৃতীয় দফায় কারণদর্শানোর নোটিশ প্রদান করে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোন জবাব না পেয়ে গত ২২ জুন বগুড়া জেলা কার্যালয় থেকে কারখানাটির বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট টিমের কার্যক্রম পরিচলানা ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের সদর দপ্তরে সুপারিশ করা হয়। কিন্তু এরপওর থেমে নেই কারখনাটির কার্যক্রম।
এলাকাবসীর পক্ষে অভিযোগকারী মহিবুল হাসান সজল বলেন, “আমাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তর কারখানাটিকে তিনবার নোটিশ দিয়েছে, এনফোর্সমেন্ট টিম পরিদর্শন করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। কিন্তু এখনও কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। উপরন্তু অভিযোগ করা কারণে কারখানার মালিক আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকী দিচ্ছে।“
শেরপুরে অনুমোদন বিহীন কারখানার পরিবেশ দূষণের কারণে এলাকায় বাসবাস করা দূরহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলকাবাসী।
আব্দুল মোমিন আকন্দ বলেন, “কারখানার বিকট শব্দের কারণে আমাদের সন্তানেরা লেখাপড়া করতে পারে না। এছাড়াও গুড়ার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছে।“
সালেহা বেগম বলেন,”কারখানাটি চালু থাকলে বিদ্যুতের ভোল্টেজ কমে যায়। এজন্য পানির পাম্প, বৈদ্যুতিক বাতিসহ সকল সরঞ্জাম দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।“
পরিবেশ দূষণের বিষয়টি অস্বীকার করে কারখানার মালিক রেজাউল করিম আকন্দ বলেন, “আমরা সাবার মতো করেই কারখানা চালাচ্ছি। অভিযোগ উঠার কারণে পরিবেশগত ছাড় পত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অচিরে আমরা সেটাও পেয়ে যাব।“
তবে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছন বগুড়া জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মাহথীর বিন মোহাম্মদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, “পরিবেশ দূষণের কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষকে একবার ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কারখানাটির বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করার আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।