আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন ইসি সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
ঘোষিত রোডম্যাপে বলা হয়েছে, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা, রাজনৈতিক দল ও দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি এবং নির্বাচনী উপকরণ সংগ্রহ। এসব কাজকে ঘিরে মোট ২৪টি কার্যক্রমের সময়সূচি নির্ধারণ করেছে কমিশন।
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। এতে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, নারী প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেবেন।
এছাড়া পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ আইন ও বিধিমালা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০২৫, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা (সংশোধন), নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন-১৯৯১ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন-২০০৯ এর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য ঠিক করেছে ইসি।
রোডম্যাপে আরও বলা হয়ে, দেশীয় পর্যবেক্ষক নিবন্ধন শেষ হবে ২২ অক্টোবরের মধ্যে এবং ১৫ নভেম্বর তাদের সনদ প্রদান করা হবে। একই তারিখের মধ্যে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমতি প্রদান কার্যক্রমও সম্পন্ন করা হবে। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার প্রস্তুতি হিসেবে তথ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়, টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করবে কমিশন।
ইসি জানিয়েছে, নির্বাচনী ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা ও পোস্টার মুদ্রণের কাজ শেষ হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে ২৯ আগস্ট থেকে এবং ভোটগ্রহণের কয়েকদিন আগে তা শেষ করা হবে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনী উপকরণ বিতরণ সম্পন্ন করা হবে। ব্যালট পেপার চূড়ান্ত হবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে।
এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য অর্থ বরাদ্দ ও প্রস্তুতি বৈঠক হবে ১৬ থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে। ভোটা গ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত হবে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রথম সভা বসবে ২৫ সেপ্টেম্বর এবং ধাপে ধাপে আরও সভা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের কার্যক্রম ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে শেষ করা হবে বলেওা জানানো হয়েছে।
তফসিল ও ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা নিযয়ে সাংবাদিকদের ইসি সিনিয়র সচিব বলেন, ভোট গ্রহণের ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। প্রধান উপদেষ্টা চান রমজানের আগেই নির্বাচন সম্পন্ন হোক। যদি হিসাব করা হয়, তবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গণপরিষদ বা গণভোটের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনের বাইরে আমাদের অন্য কোনো কিছু আলোচনার সুযোগ নেই।’