দেশ চালাবেন রাজনীতিবিদরা, অন্তর্বর্তী সরকার নয় এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজ।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অভিযোগ ও স্ব-নিয়ন্ত্রণ অন্বেষণ’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, “এটি অন্তর্বর্তী সরকার। যার দায়িত্ব সীমিত সময়ের জন্য। বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে রাজনীতিবিদদের হাতে, এটাই স্বাভাবিক। তবে রাজনীতির নামে ভিন্ন রূপ দেওয়ার চেষ্টা হলে তা জাতির জন্য বিপজ্জনক।”
তিনি সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “১৬ বছর ধরে যে সংকট ও বাধার মুখে গণমাধ্যম কাজ করছে, সে বিষয়ে সাংবাদিক ইউনিয়ন কিংবা সিভিল সোসাইটির পক্ষ থেকে কি কোনো মূল্যায়ন করা হয়েছে? কেন একটি পর্যালোচনামূলক উদ্যোগ দেখা যায়নি?”
আত্মসমালোচনার জায়গায় দাঁড়িয়ে রীয়াজ বলেন, “সাংবাদিকদের মাঝে মাঝে প্রশ্ন করি, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি সাংবাদিক না রাজনীতিবিদ? এক বছর আগের জুলাই আন্দোলনের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সাংবাদিকদের ডেকেছিলেন, এবং সেখানে যেভাবে কথাবার্তা হয়েছিল, তা কি সাংবাদিকতা? সেই অবস্থান কি সাংবাদিকতার আদর্শ বহন করে?”
আলী রীয়াজ বলেন, “বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টস (ডিইউজে) এসব সংগঠন দলীয়ভাবে বিভক্ত হতে হতে এমন এক অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তারপরও আমরা বলি, সাংবাদিকতার জন্য আমাদের দাবি আছে। নিশ্চয়ই আছে, তবে নিজেদের দায়ও রয়েছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “একটি বিকল্প সম্পাদক পরিষদ গড়ে তোলা হয়েছে, যেটি মূলত রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করে। এটা একদম স্পষ্ট, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দলীয় বিবেচনায় করা হয়েছে।”
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) আয়োজনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ও ‘তৃতীয় মাত্রা’র উপস্থাপক জিল্লুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাসস প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, গণফোরাম প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক এস এম শামীম রেজা, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা, ঢাকা ট্রিবিউনের এক্সিকিউটিভ এডিটর রিয়াজ আহমেদ, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের এডিটর-ইন-চিফ রেজাওয়ানুল হক রাজা, সিজিএস-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পারভেজ করিম আব্বাসী এবং ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক কাজী জেসিন।