বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে কোচিং পরিচালনা, গাইড বই বিক্রি এবং অভিভাবকদের প্রতি অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সালমা খাতুন এবং সহকারী শিক্ষক সেলিনা সুলতানা, শামীমা আক্তার, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. রবিউল ইসলাম।
অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে অনুসন্ধান চালানো হয়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিদ্যালয় থেকে প্রায় ২৫০ মিটার দূরত্বে ‘এ জেড মেমোরিয়াল স্কুল’ নামে একটি ভাড়া করা ভবনে প্রতিদিন সকাল ৭টা ৩০ থেকে ৯টা পর্যন্ত প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হচ্ছে।
কিছু শিক্ষার্থী জানায়, ওই শিক্ষকদের কোচিং না করলে পরীক্ষায় খারাপ ফল দেওয়া হয়। অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষকরা প্রাইভেট না পড়ানোয় তাদের সন্তানদের মানসিক চাপে ফেলা হয়, এমনকি শারীরিক হেনস্থার শিকারও হতে হয়। ফলে বাধ্য হয়েই অনেকেই কোচিংয়ে অংশ নিচ্ছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের “কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২” অনুসারে, শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে পারেন না। নির্দিষ্ট অনুমতির ভিত্তিতে অন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষার্থী পড়ানো যেতে পারে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা সালমা খাতুন বলেন, তিনি এ ধরনের কোনো নীতিমালা সম্পর্কে অবগত নন। অন্যদিকে এক সহকারী শিক্ষিকা সেলিনা সুলতানা বলেন, “নীতিমালা দিয়ে কিছুই হবে না।” সরকারি বিধিমালা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই সব বিধিনিষেধে কিছু যায় আসে না।”
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কোচিং নিষিদ্ধ নীতিমালা পুনরায় কার্যকর করার সিদ্ধান্ত হয় এবং তা সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পাঠানো হয়েছে।
শেরপুর পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ে আগে কিছু জানতেন না জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।