বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হয়নি বলে জানিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ও মৌলভীবাজারে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষের বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ত্রিপুরার গোমতী নদীতে ভারতীয় বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার জান্য বাংলাদেশে বন্যার সৃষ্টি হয়নি। আমরা বাংলাদেশের মানুষকে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখেছি যে ত্রিপুরার গোমতী নদীর ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্ত অবস্থিত জেলাগুলোতে ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাস্তবে এটি সঠিক নয়।
সেখানে আরও বলা হয়, আমরা উল্লেখ করতে চাই ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় বেশ কয়েকদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে এই বন্যা মূলত বাঁধের ভাটির দিকের ওই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির জন্য হয়েছে।
ত্রিপুরার গোমতী নদীর ডাম্বুর বাঁধটি সীমান্ত থেকে অনেক দূরে। বাংলাদেশের ১২০ কিলোমিটারেরও বেশি উজানে অবস্থিত এটি। বাঁধটি স্বল্প উচ্চতাবিশিষ্ট (প্রায় ৩০ মিটার), যা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে ১টি গ্রিডে পাঠায় এবং সেখান থেকে বাংলাদেশও ত্রিপুরা থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎশক্তি গ্রহণ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার (২১ আগস্ট) বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশে পাঠানো তথ্যে ক্রমবর্ধমান প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। এদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে বন্যার কারণে বিদ্যুৎবিভ্রাট ঘটার ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবুও আমরা জরুরি ভিত্তিতে বন্যার বিষয়ে তথ্য পাঠানোর জন্য তৈরি অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগ সচল রাখার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদীতে বন্যা একটি যৌথ সমস্যা। যা উভয় পক্ষের জনগণের জন্য ব্যাপক দুর্ভোগ সৃষ্টি করে এবং এ সমস্যার সমাধানের জন্য ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন।
যেহেতু ২টি দেশের ৫৪টি অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদী আছে, সে জন্য নদীর পানি-বিষয়ক সহযোগিতা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পৃক্ততার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা দ্বিপক্ষীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত বিষয় আলোচনার মাধ্যমে পানিসম্পদ ও নদীর পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগগুলোর সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।