বগুড়ার শেরপুরে ঐতিহাসিক মা ভবানীর মন্দিরে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব উদযাপিত হয়েছে। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিনটিকে ঘিরে উপমহাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম এই মন্দির প্রাঙ্গণে হাজার হাজার পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। সেই সাথে অতীত জীবনের পাপ মোচন এবং পূন্যলাভের আশায় মা ভবানীর মন্দির সংলগ্ন শাঁখারী পুকুরে স্নান উৎসবে মেতে ওঠেন সকলেই।
প্রতি বছর মাঘ মাসে পূর্ণিমার চাঁদের মাঘী পূর্ণিমার পঞ্জিকা তিথি অনুসারে এ পূন্যস্থানে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরেও উৎসবটির আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকেই মন্দিরস্থলে পুণ্যার্থীদের আগমন হতে থাকে।
ধর্মীয় শাস্ত্র্যমতে, মাঘী পূর্ণিমার দিনে মা ভবানীর মন্দির সংলগ্ন শাঁখারী পুকুরে স্নান করলে অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূন্যলাভ হয়। সেই আশায় দেশ বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত নারী-পুরুষ এবং শিশু-কিশোর মন্দিরের শাঁখা পুকুরে স্নান করেন। সেই সাথে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রক্ষিত মা ভবানীর প্রতিমা দর্শন, অর্ঘদান, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, মাতৃদর্শন করেন সকল ভক্তরা।
এদিকে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও মা ভবানী মন্দিরের চারপাশে বিশাল মেলা বসেছে। মেলায় বিভিন্ন মিষ্টান্ন সামগ্রীসহ পাওয়া যায় অনেক রকমের খাবার। সেই সাথে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত নানা রকমের বই পুস্তকও মেলায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বগুড়ার শেরপুরে ঐতিহাসিক মা ভবানীর মন্দিরে মাঘী পূর্ণিমা উৎসবের বিষয়ে মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতা ও শেরপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিমাই ঘোষ বলেন, যুগ যুগ আগে থেকেই এই ধর্মীয় তিথি উৎসব পালিত হয়ে আসছে। বিগত ৩ বছর বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে এই উৎসবে লোক সমাগম কম হলেও সেই প্রভাব কেটে যাওয়ায় এবছর প্রায় লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে। প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎবমুখর পরিবেশে ধর্মীয় এই অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে।
এছাড়াও ধর্মীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালন করার সুবিধার্থে প্রশাসনের পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়। যাতে করে পুণ্যার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে পূজা-অর্চনা করতে পারেন। সেই সাথে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পুণ্যার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। মন্দিরের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক প্রসাদ বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্দির কমিটির ওই নেতা।