নিখোঁজের ৯ বছর পর ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। রোববার (১১ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে বহনকারী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
২০১৫ সালের মার্চ মাসের ১০ তারিখ ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। নিখোঁজের দুই মাস পর ওই বছরের ১১ই মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বলে জানা যায়। অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে আটক দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।
মেঘালয় পুলিশকে তখন সালাউদ্দিন বলেন, ঢাকার উত্তরার থেকে গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে কয়েকজন লোক তাকে তুলে নিয়েছিল। এরপর প্রায় রাতভর গাড়িতে যাওয়ার পর ১টি এসইউভিতে করে তাকে মেঘালয়ের শিলং নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কে বা কারা তাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলো তা বলতে পারেননি তিনি।
ওই মামলায় ভারতের নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে খালাস পান সালাহউদ্দিন। পরে ভারত সরকার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়। পরে ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিল করেলে খালাস পান সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
তবে তার নিকট পাসপোর্ট না থাকায় সালাহউদ্দিন তখন দেশে ফিরতে ট্রাভেল পারমিটের জন্য আসামের গৌহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেন। এরপর ২০২৪ সালের ৮ জুন প্রথম দফায় ট্রাভেল পাস পান তিনি। তবে আইনি জটিলতার কারণে সেবার দেশে ফিরতে পারেননি তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন গত মঙ্গলবার আবারও ট্রাভেল পাস পান সালাহউদ্দিন আহমদ। এরপর ভারতের গোয়াহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার রুহুল আমিন আহমে এই ট্রাভেল পাস ইস্যু করেন।
প্রসঙ্গ, ১৯৯১ সালে বিএনপির সরকার ক্ষমতায় এলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত সহকারী সচিব ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। এরপর সরকারি চাকরি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া ও পেকুয়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সালাহউদ্দিন আহমদ। মেঘালয়ে আটকের সময় তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ভারতে কারাগারে থাকা অবস্থায় বিএনপি তাকে স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করে।