নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পোশাকশিল্প অঞ্চলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে রবিনটেক্স গার্মেন্টসের শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আউখাবো এলাকায়, যেখানে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী টানা সংঘর্ষ চলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে গেছে, আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগমুহূর্তে রবিনটেক্স গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটির ৫০ জন শ্রমিককে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিকরা সোমবার (৭ এপ্রিল) থেকে কারখানার ভেতরে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন।
বুধবার (০৯ এপ্রিল) সকালে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধের পরিকল্পনা করলে যৌথবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের কাজে ফেরার আহ্বান জানান। কিন্তু বিষয়টি ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে পানির বোতল ও ইটপাটকেল ছোড়ে।
প্রতিক্রিয়ায় যৌথবাহিনী শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনার পর দুপুর ১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার বাইরে এসে মহাসড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে এবং টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ গড়ে তোলে। এসময় কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিজানুর রহমান মিজান জানান, “শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করলে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। কিন্তু শ্রমিকরা উগ্র হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।”
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌথবাহিনী মাঠে নামে এবং এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।”
প্রতিবেদন লেখ পর্যন্ত ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে এবং কারখানার আশেপাশে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে পুনরায় সহিংসতা ছড়িয়ে না পড়ে।