ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে আবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতি। এবার পাকিস্তানের অভিযোগ, ইসরাইলি প্রযুক্তিতে তৈরি ‘হ্যারপ’ আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে একযোগে হামলা চালিয়েছে ভারত। এসব ড্রোন পাকিস্তানের অন্তত ৯টি এলাকায় আঘাত হানে। এই হামলার ঘটনায় একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৪ সদস্যসহ অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (০৮ মে) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী দাবি করেছেনন, ভারত ইসরাইলি ‘হ্যারপ ড্রোন’ ব্যবহার করে নজিরবিহীন সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছে। তার ভাষ্য মতে, এটি কেবল সীমান্ত উত্তেজনা নয়, বরং একটি উসকানিমূলক পদক্ষেপ।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দাবি করেন, গতকাল রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মোট ২৫টি ইসরায়েলি হ্যারপ ড্রোন ছোড়ে ভারত। এসব ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে লাহোর, আট্টক, গুজরানওয়ালা, চাকওয়াল, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানো, চোর ও করাচির আশপাশ এলাকায়।
তবে লাহোরের কাছে ভারতের একটি ড্রোন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে বলে নিশ্চিত করেছে আইএসপিআর। এতে দেশটির সেনাবাহিনীর চার সদস্য আহত হন এবং সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়। অন্যদিকে সিন্ধুর মিয়ানো এলাকায় ড্রোন বিস্ফোরণে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং একজন আহত হন।
ইসরায়েলের অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর তৈরি হ্যারপ ড্রোনকে ‘লয়টারিং মিউনিশন’ বা আত্মঘাতী ড্রোন হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এটি শত্রুর রাডার বা নির্দিষ্ট সামরিক স্থাপনায় আঘাত এনে নিজেই বিস্ফোরিত হয়। এই ড্রোন নজরদারি ও আক্রমণ দুই উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে রাডার ধ্বংসে এর কার্যকারিতা বিশেষভাবে প্রমাণিত।
ভারতের কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়েছে ভারত। এর প্রতিক্রিয়ায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের মুজাফফরাবাদ, কোটলি, শিয়ালকোট, মুরদি, শাকারঘার, পূর্ব আহমেদপুরসহ অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ৪১ জন নিহত এবং ৫৭ জন আহত হয়েছেন।
ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ অভিযানে পাকিস্তানের ১০০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণে ভারতের ১৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
সীমান্ত পরিস্থিতি ঘিরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। আন্তর্জাতিক মহল সতর্ক দৃষ্টি রাখছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর ওপর।