একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম খালাস পেয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মত রায়ে তার দায়মুক্তি ঘোষণা করেন।
এর মাধ্যমে ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড এবং ২০১৯ সালে আপিল বিভাগে তা বহাল রাখার রায়—দুটিই বাতিল হলো। এখন তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকলে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বলা হয়েছে।
এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা, যেখানে যুদ্ধাপরাধ মামলার রিভিউ শুনানির মাধ্যমে কেউ মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেন।
২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন এ টি এম আজহারুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। পরে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি আপিল করেন। ওই আপিলের রায়ে ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। এর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয় ২০২০ সালের ১৫ মার্চ।
তবে আজহারুল সে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন ২০২০ সালের ১৯ জুলাই। শুনানি শেষে ২০২4 সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বেঞ্চ তার আবেদন মঞ্জুর করে এবং পূর্ণাঙ্গ শুনানির নির্দেশ দেয়। এরপর সব প্রক্রিয়া শেষে ২৭ মে চূড়ান্ত রায় দেন আদালত।
এদিন সকাল ১০টার দিকে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মামলার তথ্যপ্রমাণ পর্যাপ্ত ছিল না এবং সাক্ষ্যগুলো বিচারিকভাবে পর্যালোচনা করার প্রয়োজন ছিল। ফলে এই রায়ে পূর্ববর্তী রায়গুলো বাতিল করা হয়েছে।
আদালতে আজহারুলের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও সৈয়দ মো. রায়হান উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।