রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক-কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করেছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে উপাচার্য জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকেন।
এদিকে শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষক-কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন অভিযোগ করেন, “একদল সন্ত্রাসী কায়দায় বারবার শিক্ষক-কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করছে। এদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করবো। প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা কোনো অযৌক্তিক দাবি নয়। দেশের সবাই এটা ভোগ করছে, আমরা কেন বঞ্চিত থাকবো।
শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে প্রশাসন ভবনের সামনে তারা অবস্থান নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় রাকসু নির্বাচনের প্রচারণাও ম্লান হয়ে পড়েছে। অপর দিকে শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনড়; তাদের বক্তব্য, কোটা পুনর্বহাল করা যাবে না।
উল্লেখ্য, শিক্ষক-কর্মকর্তারা গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা প্রদানের শর্তে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। ১৮ সেপ্টেম্বর আংশিক শর্ত সাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরই ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, সমন্বয়ক ও সমমনা সংগঠন রাতেই উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে। একই রাতে সংস্কৃত বিভাগের ছাত্র আশাদুল ইসলাম কাফনের কাপড়ে আমরণ অনশনে বসেন; সাথে যোগ দেন সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারসহ অনেকে।
ঘটনার পর উপ-উপাচার্য ও অন্যান্য কর্মকর্তারা চলাচলে বাধার মুখে পড়েন, আন্দোলনকারীরা উপ-উপাচার্যকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বাধা দিলে তিনি হেঁটে বাসভবনে যেতে চাইলেও গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতিও হয়; পরে তিনজনকে প্রশাসন ভবনের একটি কক্ষে অভ্যন্তরীণভাবে অবরুদ্ধ করা হয়।
কর্তৃপক্ষের চেষ্টা সত্ত্বেও অনশন ভাঙানো সম্ভব হয়নি। পরের দিন তিনজন অসুস্থ হয়ে মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। রাত দেড়টার দিকে উপাচার্য প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে জরুরি সিন্ডিকেট ডেকে পরিস্থিতি আপাতত স্বল্প সময়ের জন্য শান্ত হয়।