নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার উথলী বাজারে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে বসেছে তিন শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। একদিনের এই বিশেষ হাট ঘিরে উৎসবের রং ছড়িয়েছে পুরো এলাকাজুড়ে।
মাছের পাশাপাশি সবজি, মিষ্টি, দই, খেলনা, নাগরদোলা, সব মিলিয়ে জমজমাট আয়োজন সকাল থেকেই টেনে নিয়েছে আশপাশের ২০ গ্রাম থেকে আগত হাজারো মানুষকে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, অগ্রহায়ণের শুরুতে নবান্ন উপলক্ষে উথলী, রথবাড়ি, নারায়ণপুর, ধোন্দাকোলা, সাদুল্লাপুর, বেড়াবালা, আকনপাড়া, দেবীপুর, গরীবপুর, গুজিয়া, রাহবল, দারিদহ, কিচক, আটমুল, আলিয়ারহাট, ভাইয়েরপুকুর, পিরব, জামুরহাট ও বুড়িগঞ্জহাটসহ বিভিন্ন গ্রামে বিশেষ আয়োজন হয়ে থাকে। জামাই–মেলা নামেও পরিচিত এ উৎসবে আগেই মেয়ের জামাইদের নিমন্ত্রণ জানানো হয়।
মেলা চত্বর ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ২০০ দোকানের অর্ধেকই মাছের। দেড় কেজি থেকে ২০ কেজি ওজনের বোয়াল, রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার ও ব্রিগেড কার্পসহ নানান প্রজাতির মাছের সমাহার। দেশীয় নদীর মাছ কম মিললেও দাম ছিল চড়া-বড় আকৃতির রুই, কাতলা ও চিতল কেজিতে ৬০০–৭০০ টাকা, মাঝারি মাছ ৪০০–৫৫০ টাকা। সিলভার ও ব্রিগেড কার্প মিলেছে ৫০০–৬০০ টাকায়।
মেলায় আসা ক্রেতা মোস্তাকিম জানান, “নবান্নে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে এখান থেকেই মাছ কিনি। তবে এবার দাম বেশ বেশি।”
বিক্রেতা আনারুল ইসলাম বলেন, “পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এবার পাঁচ মণ মাছ তুলেছি, লাভ ভালো হবে আশা করি।” আরেক বিক্রেতা মুঞ্জু মিয়ার মতে, এবারের ক্রেতা কিছুটা কম দেখা যাচ্ছে।
উথলী বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, সূর্য ওঠা থেকে রাত পর্যন্ত চলবে কেনাবেচা। তাঁদের হিসাব, এ মেলায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার বেচাকেনা হবে, যার মধ্যে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার মাছ বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নবান্ন যদিও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব, এখন সব ধর্মের মানুষই সমানভাবে অংশ নেন।

এদিকে, একই উপলক্ষে মহাস্থান বাজারেও শত বছরের ধারাবাহিকতায় আরেকটি মাছের মেলা বসেছে। বিক্রেতারা জানান, ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক দোকানে পাঁচ থেকে দশ মণ পর্যন্ত মাছ বিক্রি হয়েছে। শনিবার রাত থেকেই প্রায় ২০টি আড়তে পাইকারি লেনদেন শুরু হয়


