ঈদুল আজহা সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামলেও তা আটকে পড়েছে দীর্ঘ যানজটে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে রাস্তায়। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে স্থবির অবস্থা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীরা। টিকিট হাতে অপেক্ষায় থেকেও অনেকে ফিরে যাচ্ছেন গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। যেখানে তিন ঘণ্টার পথ, সেখানে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে পৌঁছাতে। এর ফলে তৈরি হয়েছে প্রচণ্ড ক্লান্তি ও ভোগান্তি।
অনেক যাত্রী বলছেন, নির্ধারিত সময়েও বাস ফিরে না আসায় তাঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছেন কাউন্টারে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে যাত্রা বাতিল করে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। আবার কেউ ছাদে, ট্রাকে কিংবা মোটরসাইকেলে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা করছেন প্রিয়জনের কাছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস থেকে ত্রিশাল পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে যানজট লেগেই আছে। এতে গতি থেমে যাচ্ছে একেবারে থেমে থেমে। বিশেষ করে কোরবানির পশুবাহী ট্রাকগুলো পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
পাটুরিয়া ঘাট এলাকায়ও যানজট চরমে। ফেরিঘাটের সার্ভিস সচল থাকলেও অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ২৩টি ফেরি চললেও যানবাহনের দীর্ঘ সারি কাটছে না কিছুতেই।
এদিকে, শুক্রবার (৬ জুন) মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “কোনো কাউন্টার অতিরিক্ত ভাড়া নিলে তাদের রুট পারমিট বাতিল করা হতে পারে। মোবাইল টিম সক্রিয়ভাবে অভিযান চালাচ্ছে।”
সড়কজুড়ে যানজট প্রসঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদের চাপ, পশুবাহী যানবাহন এবং কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে তাঁরা আশাবাদী, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে।
দুর্ভোগের মাঝেও মানুষের মুখে রয়েছে অপেক্ষার প্রশান্তি। দীর্ঘ রাস্তার ধকল ভুলে যেতে চান প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের খুশিতে মিশে গিয়ে। তাই কষ্ট হলেও কেউ ফিরছেন না হতাশ হয়ে, বরং মুখে বলছেন—“আর কিছুক্ষণ, তারপরই বাড়ি!”