টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ৩ উপজেলা ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরামের প্রতিটি গ্রামসহ ছাগলনাইয়ার নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। কহুয়া, মহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পুরনো ১২টি ভাঙ্গা স্থানসহ ২৭টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি মুহূর্তে পানির পরিমান বেড়েই চলেছে। পানিবন্দি গ্রামের মানুষদের স্পিড বোর্ড বা নৌকা দিয়ে উদ্ধার করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ নেই।
আগস্ট এর ১৭ তারিখ থেকে অতিমাত্রায় বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ভোর রাতে কহুয়া ও মুহুরী নদীর ফুলগাজী ও পরশুরামের বাঁধের ভাঙা স্থান দিয়ে লোকলয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে মুহূর্তেই মানুষের ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ছাগলাইয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে একবার ও আগস্ট মাসে ২ বারসহ পরশুরাম ও ফুলগাজীতে ৩ বার বন্যা হয়েছে। এতে ওই এলাকায় বসবাসকারীরা মহাবিপদে পড়েছে।
বন্যার কারণে কৃষি ও মৎস্যখাতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট বীজতলা ও সবজি বাগানগুলো। মাত্র ২ মাসের ব্যবধানে ৩ বার বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন স্থানীরা বাসিন্দারা।
তারা জানান, গত ২ বারের চেয়ে এবারের বন্যা খুবই ভয়াবহ। মঙ্গলবার ভোর থেকে মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি উঠা শুরু করেছে। অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন তাদের বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে গেছে।
রান্না ঘরে পানি ঢোকায় তারা চুলা জ্বালাতে পারছেন না। অনেকেই ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে খাটের উপরে খাট রেখে কোনো রকম জীবনযাপন করছেন। ২ উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলে জানা যায়।
ফেনীর ৩ উপজেলায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূইয়া ও পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা জানিয়েছেন, নদীগুলোর মোট ২৭টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে গছে।