ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো: সারজিস আলম।
ডিবি থেকে মুক্তি পাওয়ার বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) বিকেলে ফেসবুক পোস্টে সারজিস লেখেন, ‘কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না। কিন্তু আপনারা কথা রাখেননি। আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর আঘাত করেছেন।’
‘সারা দেশে স্কুল-কলেজে আমার ভাইবোনদের ওপর লাঠিচার্জ করেছেন। যাকে ইচ্ছা তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাড়িতে গিয়ে তার ভাইকে তুলে নিয়েছেন, তার বাবাকে হুমকি দিয়েছেন। মাশরুর তার উদাহরণ।’
সারজিস আরো লেখেন, ‘যারা একটিবারের জন্যও এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন তারা শান্তিতে ঘুমোতে পারেন না, সবসময় গ্রেপ্তারের ভয়ে থাকে। এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ-খবর পায়নি। এমন তো হওয়া উচিত ছিল না।
কোথায় মহাখালীর সেতুভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। আর আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মো: আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতু ভবনে হামলার দায়ে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলেন। সাথে আছেন মো: আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুরসহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী।’
তিনি আরও লেখেন, ‘রিকশা থেকে ধরে নামিয়ে প্রিজনভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন। আপনারা কী ভাবছেন এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে? ছয় দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬ জনকে আটকে রাখা যায়, কিন্তু এ দেশের তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে আটকে রাখবেন? দূর্নীতি, অর্থ পাচার, লুটপাট, ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কিভাবে নিবৃত করবেন।’
‘পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি, এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের পুলিশের উপর নয়। এ ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটির উপর। যে পোশাকটাকে ব্যবহার করে বছরের পর বছর আপনাদের মাধ্যমে এ দেশের মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল-আদালতের প্রাঙ্গনে চক্কর কাটানো হয়েছে, আমাদের ক্ষোভ সেই পোশাকটির উপর। আপনাদের ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, আপনাদের বুকে টেনে নিবো।’
‘এ পথ যেহেতু ন্যায়ের পথ, সত্যের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবেলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই ৷ যতদিন না এদেশে আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে, জুলুম, গণগ্রেপ্তার, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে ততদিন এ লড়াই চলবে ৷’