ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির জানাজায় অংশ নিতে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মানুষের ঢল নেমেছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এসে জড়ো হতে থাকেন।
দীর্ঘ সময় সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধারণ মানুষের জন্য দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়। ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি প্রবেশপথে কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। চীন থেকে আনা আটটি আর্চওয়ে গেটের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশ করছেন।
রাজধানীর বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকেও জানাজায় অংশ নিতে মানুষ ছুটে এসেছেন। যে যেভাবে পেরেছেন, সময়ের আগেই উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করছেন সবাই। অনেক সাধারণ মানুষ বলছেন, শহীদ হাদির জানাজা একটি বড় গণজমায়েতে রূপ নিতে পারে।
জানাজাকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পুরো সংসদ ভবন এলাকা জুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা ও নজরদারি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে শহীদ হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। সেখান থেকে মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। গোসল সম্পন্ন করার পর জানাজার জন্য মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
ঢামেকে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ জানিয়েছেন, শহীদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজ পড়াবেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। জানাজা শেষে তাকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশেই দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগের সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শহীদ হাদির মরদেহ সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সন্ধ্যা ৫টা ৪৯ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।


