আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন এবং ভূমিদস্যুদের আগ্রাসন বন্ধসহ ৯ দফা দাবিতে বগুড়ার শেরপুরে সমাবেশ করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।
শুক্রবার (০১ আগস্ট) বিকালে পৌর শহরের সান্যাল পাড়া এলাকায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, শেরপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক বাবলু রুহী দাসের সভাপতিত্বে এবং দুর্জধন রবিদাসের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি বিমল রবি দাস।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শুভ্রত মালাকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমল রবি দাস বলেন, “আমরা দেশের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত ভূমিদস্যুদের দ্বারা উচ্ছেদ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি না থাকায় আমাদের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। অবিলম্বে ৯-দফা দাবি মেনে নিয়ে আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে।”
এছাড়াও বক্তারা বলেন, “সমতলের আদিবাসীদের জমিজমা সুরক্ষার জন্য একটি স্বাধীন ভূমি কমিশন এখন সময়ের দাবি। এর মাধ্যমেই ভূমির বিরোধ নিষ্পত্তি ও আদিবাসীদের অস্তিত্ব রক্ষা করা সম্ভব।” আদিবাসীদের ওপর চলমান নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, ভূমি দখল ও মিথ্যা মামলা বন্ধের জোর দাবি জানান।
সমাবেশে উত্থাপিত ৯ দফা দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে, আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন, আদিবাসীদের জমিজমা জবরদখল ও উচ্ছেদ বন্ধ এবং দখল হওয়া জমি পুনরুদ্ধার, শিক্ষা ও চাকরিতে আদিবাসী কোটা পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু, আদিবাসীদের ওপর সকল প্রকার নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ও মিথ্যা মামলা বন্ধ করা, আদিবাসীদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, সকল সরকারি কমিটিতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন শেরপুর উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব সন্তোষ রাজভোর, শ্রীনাথ মাহোতো, দুলাল মাহাতো, সন্তোষ বর্মন, নির্মল বর্মন এবং নারী নেত্রীদের মধ্যে চন্দনা মালি, মিতা দে, রিতা রানী ও মমতা রানী প্রমুখ। বক্তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।