দলীয় আদর্শ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মান্দা উপজেলা বিএনপি দলের সদস্য ডাঃ ইকরামুল বারী টিপুর সঙ্গে সব ধরনের রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে নওগাঁর উপজেলার প্রসাদপুর বাজারের মনসুর মৃধার আমবাগানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, মান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক এম এ মতীন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এ.কে এম নাজমুল হক নাজু, সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন টুকু, আলহাজ্ব মন্টু মৃধা, রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামশুল ইসলাম বাদল, এ্যাড. কুমার বিশ্বজিৎ সরকার, দপ্তর সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ এবং সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জামিলা আক্তার ফেন্সি প্রমুখ।
এছাড়াও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক নূরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ডি. এম. আব্দুল মালেক, সাদেকুল ইসলাম, এ্যাড. মিজানুর রহমান জুয়েল রানা, শরিফুল ইসলাম বেলাল, এবং সিদ্দিক হোসেন, উপজলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব পলাশ কুমারসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন খান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় নেতৃত্বকে পাশ কাটিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন।
তিনি বলেন, গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এশিয়ান টিভির এক অনুষ্ঠানে ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু মামলা সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন। এ কারণেই মান্দা উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে এই জরুরি ‘প্রতিবাদ ও সংবাদ সম্মেলনের’ আয়োজন করা হয়।
বেলাল হোসেন অভিযোগ করেন, ডাঃ টিপু উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের অবহিত না করে সভা-সমাবেশ করছেন এবং গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তার বিরুদ্ধে সাতটি নাশকতার মামলা হয়েছিল, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, অতীতে মুনসুর মৃধা হত্যা মামলার (মামলা নং ৫, তারিখঃ ১১/০৩/২০০৪, জি.আর. ৩২/২০০৪) ১ নম্বর আসামি ছিলেন ডাঃ টিপু। এ মামলার কারণে তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত হন। পরে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সহায়তায় মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
তাছাড়া ৫ আগস্টের পর বিল মান্দা এলাকায় ১৮ একর জমি দখলের অভিযোগেও তিনি জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বলেও জানানো হয়।
নেতারা বলেন, ২০০৬ সালের নির্বাচনের আগে ডা. টিপু সংস্কারপন্থী হয়ে বিকল্পধারায় যোগ দেন এবং প্রার্থী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর বিরোধিতা করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইমাজ উদ্দিন প্রামানিককে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে কলসি মার্কার পক্ষে ভোট করেন। যা দলের সঙ্গে বেইমানী করা ছাড়া আর কিছু নয়।
তারা আরও বলেন, তারেক রহমানের বারবার ঐক্যবদ্ধ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ বিএনপি গঠনের নির্দেশনা সত্ত্বেও ডাঃটিপু সংগঠনবিরোধী ও মিথ্যাচারমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, “ডাঃ ইকরামুল বারী টিপুর আদর্শবিরোধী কর্মকাণ্ড, মিথ্যাচার ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ভার মান্দা উপজেলা বিএনপি কোনোভাবেই বহন করবে না। তাই তার সঙ্গে সব রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা বিএনপি পরিবার।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষে সাংবাদিক ও নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।


