রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৮০) এবং তাঁর স্ত্রী সুর্বণা রায় (৭০)-এর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয়দের দেওয়া খবরের পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
তারাগঞ্জ থানার এসআই মো. আবু ছাইয়ুম জানান, সকাল ৯টার দিকে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বাড়ির ভেতরে ডাইনিং রুমে যোগেশ চন্দ্র রায়ের এবং রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের মরদেহ পাওয়া যায়। দুজনের শরীরে মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে হত্যার ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেশী দীপক চন্দ্র রায় বলেন, দীর্ঘ চার-পাঁচ দশক ধরে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা যোগেশ চন্দ্র রায়ের বাড়ির দেখাশোনা করেন। প্রতিদিনের মতো তিনি সকালে কাজে যেতে গেলে দেখেন ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ডাকাডাকি করেও কেউ না বের হওয়ায় আশপাশের কয়েকজনকে ডাকেন। পরে মই বেয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে ডাইনিং রুমে যোগেশ রায়ের এবং রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান।
ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। তারাগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, যোগেশ চন্দ্র রায় পেশায় শিক্ষক ছিলেন এবং ২০১৭ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ থেকে অবসর নেন। তাঁর দুই ছেলে—বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় জয়পুরহাটে থাকেন এবং ছোট ছেলে রাজেশ খন্না চন্দ্র রায় ঢাকায় পুলিশে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়িতে দম্পতি দুজনেই বসবাস করতেন।
পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। হত্যার কারণ ও সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোজাফফর হোসেন জানান, ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। যারা জড়িত থাকুক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


