প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরীকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া জেলা কমিটির সাবেক সদস্যসচিব সাকিব খান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাকিব খান নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পরিচয়ে একজন পুলিশ সুপারের (এসপি) পদায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারীকে একটি মোবাইল নম্বর থেকে কলে দিয়ে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগ থানা থেকে ঢাকা মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো নথিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
যৌথবাহিনী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা সাকিব খানকে বগুড়া শহরের নারুলী এলাকার বাসা থেকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে। বুধবার আদালতে জামিন শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলাম।
এর আগে গত সোমবার শাহবাগ থানার উপ-পরিদশর্ক এসআই) শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২২ ও ২৭ ধারায় সাকিব খানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালতে পাঠানো নথিতে স্বাক্ষর করেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান।
এতে উল্লেখ করা হয়, সাকিব খান নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পরিচয়ে একজন পুলিশ সুপারের পদায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরীকে একটি মোবাইল নম্বর থেকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং তার ব্যক্তিগত সহকারীর নাম ভাঙিয়ে পুলিশ সদস্য ও বিসিএস কর্মকর্তাদের পদায়ন ও নিয়োগের কথা বলে অর্থ আদায় করে আসছিলেন। মামলার নথিতে বলা হয়, আসামি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য।
সাইবার অপরাধ মনিটরিংকালে এসব তথ্য পেয়ে সাকিব খানকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২২ ও ২৭ ধারায় বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্ত শেষ না হওয়ায় তাকে কারাগারে আটকে রাখা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়। জামিন দিলে তিনি পলাতক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং এতে মামলার তদন্ত ব্যাহত হতে পারে।
অন্যদিকে, গত বুধবার সাকিব খানকে সাইবার সুরক্ষা আইনে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশসহ সব কালো আইন বাতিলের দাবিতে বগুড়ায় সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এতে এনসিপি ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সাকিব খানের বাবা ফরহাদ হোসেন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সাকিব খানকে ফাঁসানো হয়েছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করে সাকিব খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছেন। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে।


