নোয়াখালীর সদরে মৃত্যুর আধা ঘন্টা পর মেয়ের আত্মহত্যা ঘটনা ঘটেছে। ওই মেয়ে ধর্মান্তরিত হয়ে এক মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে। মেয়ের এমন সিদ্ধান্ত কিছুইতেই মেনে নিতে পারেননি পরিবারসহ অসুস্থ বাবা। পারিবারিক কলহ সহ্য করতে না পেরে একপর্যায়ে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান বাবা। এই অপরাধ বোধ থেকেই বাবার মৃত্যুর আধা ঘন্টা পরেই গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে মেয়ে। বুধবার (০৫ জুন) নোয়াখালীর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উকিল পাড়ার নরেশ চন্দ্র দে এর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন, নোয়াখালীর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উকিল পাড়ার নরেশ চন্দ্র দে (৫০) এবং তার মেয়ে তিশা দে (১৯)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছ, নরেশ চন্দ্রের মেয়ে তিশা ফেনীর একটি কলেজে লেখা-পড়া করতো। পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে তিশা এক মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে। বিষয়টি তার বাবা জানতে পেরে মেয়েকে ফেনী জেলা থেকে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।
মঙ্গলবার (০৪ জুন) রাতে মেয়েকে স্বামীর সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলে তার বাবা নরেশ। কিন্তু মেয়ে তার নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নরেশ উত্তেজিত হয়ে যান।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিহতের ছোট ছেলে স্কুলে যাওয়ার সময় বাবার কাছে টাকা চাওয়ার জন্য গেলে সে বাবাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তার চিৎকার শুনে পরিবারের সকলে এগিয়ে আসে। বাবার মৃত্যু সহ্য না করতে পেরে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে আলাদা একটি কক্ষ গিয়ে সকাল ৯টার দিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে তিশা। পরে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে দুপুর ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের মরদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করে।
নোয়াখালীর সদরে বাবার মৃত্যুর আধা ঘন্টা পর মেয়ের আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে সুধারাম মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মীর জাহেদুল হক রনি জানান, নরেশ চন্দ্র কিডনিজনিত রোগী ছিলেন। তিনি বাড়িতেই ডায়ালাইসিস করতেন।
তার মেয়ে তিশা ফেনীতে লেখা-পড়া করতো। সেখানে এক মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে তিশা। বিষয়টি মেয়েটির বাবা ভালোভাবে নেননি। এসব বিষয় নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার একপর্যায়ে নরেশ চন্দ্র হার্ট অ্যাটাক করে ঘুমের মধ্যেই মারা যান। এর ৩০ মিনিট পর মেয়েটিও আত্মহত্যা করে।